HEY YOU, JOIN US & CONNECT TO BOIPUSTOK!
Learn and gain knowledge about the life stories of sages and celebrities
In stock
39 krআমলের মাধ্যমে ব্যক্তি পরিচয় ফুটে উঠে ও আল্লাহর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। সৎ আমল করা একজন মুসলিম ব্যক্তির প্রধান দায়িত্ব। আর সেজন্যই তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ আমলের বিশুদ্ধতা যাচাইয়ের প্রয়োজন মনে করে না। যে আমল সমাজে চালু আছে সেটাই করে থাকে। এমনকি আল্লাহর নৈকট্য লাভের সর্বশ্রেষ্ঠ মাধ্যম ছালাতের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। অথচ সমাজে প্রচলিত ছালাতের হুকুম-আহকাম অধিকাংশই ত্রুটিপূর্ণ। ওযূ, তায়াম্মুম, ছালাতের ওয়াক্ত, আযান, ইক্বামত, ফরয, নফল, বিতর, তাহাজ্জুদ, তারাবীহ, জুম‘আ, জানাযা ও ঈদের ছালাত সবই বিদ‘আত মিশ্রিত এবং যঈফ ও জাল হাদীছে আক্রান্ত। ফলে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর ছালাতের সাথে আমাদের ছালাতের কোন মিল নেই। বিশেষ করে জাল ও যঈফ হাদীছের করালগ্রাসে রাসূল (ছাঃ)-এর ছালাত সমাজ থেকে প্রায় বিলীন হয়ে গেছে। ফলে সমাজ জীবনে প্রচলিত ছালাতের কোন প্রভাব নেই। নিয়মিত মুছল্লী হওয়া সত্ত্বেও অনেকে নানা অবৈধ কর্মকান্ড ও দুর্নীতির সাথে জড়িত। সমাজে মসজিদ ও মুছল্লীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পেলেও দুর্নীতি, সন্ত্রাস, সূদ-ঘুষ, চুরি-ডাকাতি, যুলুম-নির্যাতন, রাহাজানি কমছে না। অথচ আল্লাহ তা‘আলার দ্ব্যর্থহীন ঘোষণা হল, ‘নিশ্চয়ই ছালাত অন্যায় ও অশ্লীল কর্ম থেকে বিরত রাখে’ (সূরা আনকাবূত ৪৫)। অতএব মুছল্লীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে যাবতীয় অন্যায়-অপকর্ম বন্ধ হবে, নিঃসন্দেহে কমে যাবে এটাই আল্লাহর দাবী। কিন্তু সমাজে প্রচলিত ছালাতের কোন কার্যকারিতা নেই কেন? এ জন্য মৌলিক তিনটি কারণ চিহ্নিত করা যায়। (এক) খুলূছিয়াতে ত্রুটি রয়েছে। অর্থাৎ ছালাত আদায় করি কিন্তু একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে তা পেশ করি না। অধিকাংশ মুছল্লী মসজিদেও সিজদা করে মাযারেও সিজদা করে, রাসূল (ছাঃ)-কেও সম্মান করে পীরেরও পূজা করে, ইসলামকেও মানে অন্যান্য তরীক্বা ও বিজাতীয় মতবাদেরও অনুসরণ করে। এই আক্বীদায় ছালাত আদায় করলে ছালাত হবে না। একনিষ্ঠচিত্তে একমাত্র আল্লাহর জন্যই সবকিছু করতে হবে, তাঁরই আইন ও বিধান মানতে হবে।[1] (দুই) রাসূল (ছাঃ)-এর পদ্ধতিতে ছালাত আদায় না করা। অধিকাংশ মুছল্লীই তার ছালাত সম্পর্কে উদাসীন। তিনি যত জ্ঞানী ও বুদ্ধিমানই হোন লক্ষ্য করেন না, তার ছালাত রাসূল (ছাঃ)-এর তরীক্বায় হচ্ছে কি-না। অথচ ছালাতের প্রধান শর্তই হল, রাসূল (ছাঃ) যেভাবে ছালাত আদায় করেছেন ঠিক সেভাবেই আদায় করা।[2] এ ব্যাপারে শরী‘আতের নির্দেশ অত্যন্ত কঠোর। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘সুতরাং দুর্ভোগ ঐ সমস্ত মুছল্লীদের জন্য, যারা ছালাতের ব্যাপারে উদাসীন, যারা লোক দেখানোর জন্য আদায় করে’ (মাঊন ৪-৬)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘ক্বিয়ামতের মাঠে বান্দার সর্বপ্রথম হিসাব নেওয়া হবে ছালাতের। ছালাতের হিসাব শুদ্ধ হলে তার সমস্ত আমলই সঠিক হবে আর ছালাতের হিসাব ঠিক না হলে, তার সমস্ত আমল বরবাদ হবে’।[3] জনৈক ছাহাবী রাসূল (ছাঃ)-এর উপস্থিতিতে তিনবার ছালাত আদায় করেন। কিন্তু রাসূল (ছাঃ) তিনবারই তাকে বলেন, তুমি ফিরে যাও এবং ছালাত আদায় কর, তুমি ছালাত আদায় করোনি।[4] ঐ ব্যক্তি তিন তিনবার অতি সাবধানে ছালাত আদায় করেও রাসূল (ছাঃ)-এর পদ্ধতি মোতাবেক না হওয়ায় তা ছালাত বলে গণ্য হয়নি। উক্ত হাদীছ থেকে বুঝা যায় যে, রাসূল (ছাঃ)-এর তরীক্বায় ছালাত আদায় না করলে কা‘বা ঘরে ছালাত আদায় করেও কোন লাভ নেই। তাঁর ছাহাবী হলেও ছালাত হবে না। অন্য হাদীছে এসেছে, হুযায়ফাহ (রাঃ) জনৈক ব্যক্তিকে ছালাতে রুকূ-সিজদা পূর্ণভাবে আদায় করতে না দেখে ছালাত শেষে তাকে ডেকে বললেন, তুমি ছালাত আদায় করনি। যদি তুমি এই অবস্থায় মারা যাও, তাহলে মুহাম্মাদ (ছাঃ)-কে যে ফিতরাতের উপর আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন সেই ফিতরাতের বাইরে মারা যাবে।[5] অন্য বর্ণনায় রয়েছে, হুযায়ফা (রাঃ) তাকে প্রশ্ন করলে বলে, সে প্রায় ৪০ বছর যাবৎ ছালাত আদায় করছে। তখন তিনি উক্ত মন্তব্য করেন।[6] অতএব বছরের পর বছর ছালাত আদায় করেও কোন লাভ হবে না, যদি তা রাসূল (ছাঃ)-এর পদ্ধতি মোতাবেক না হয়। (তিন) হারাম উপার্জন। ‘হালাল রূযী ইবাদত কবুলের পূর্বশর্ত’ কথাটি সমাজে প্রচলিত থাকলেও এর প্রতি কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। প্রত্যেককে লক্ষ্য করা উচিৎ তার খাদ্য, পানীয়, পোশাক, আসবাবপত্র হালাল না হারাম। কারণ হারাম মিশ্রিত কোন ইবাদত আল্লাহ কবুল করেন না। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ পবিত্র। তিনি পবিত্র বস্ত্ত ছাড়া কবুল করেন না’।কারো খাদ্য, পানীয় ও পোশাক হারাম হলে তার প্রার্থনা গ্রহণযোগ্য হবে না।[7] তাই দুর্নীতি, আত্মসাৎ, প্রতারণার মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ এবং সূদ-ঘুষ, জুয়া-লটারী ও অবৈধ পন্থায় প্রাপ্ত অর্থ ভক্ষণ করে ইবাদত করলে কোন লাভ হবে না। মুছল্লী উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে সচেতন না হওয়ার কারণে ছালাত যেমন পরিশুদ্ধ হয় না, তেমনি মুছল্লীর মাঝে একাগ্রতা ও মনোযোগ আসে না। ফলে ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে ছালাতের কার্যকর কোন প্রভাবও পড়ে না। অতএব আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য হবে এমন ছালাত আদায় করতে চাইলে ছালাতকে অবশ্যই পরিশুদ্ধ করতে হবে এবং একমাত্র রাসূল (ছাঃ)-এর দেখানো পদ্ধতিতেই আদায় করতে হবে। অন্য সব পদ্ধতি বর্জন করতে হবে। কারণ অন্য কোন তরীক্বায় ছালাত আদায় করলে কখনোই একাগ্রতা ও খুশূ-খুযূ সৃষ্টি হবে না। আর আল্লাহভীতি ও একনিষ্ঠতা স্থান না পেলে মুছল্লী পাপাচার থেকে মুক্ত হতে পারবে না (সূরা বাক্বারাহ ২৩৮; মুমিনূন ২)। মনে রাখতে হবে যে, এই ছালাত যদি দুনিয়াবী জীবনে কোন প্রভাব না ফেলে, তাহলে পরকালীন জীবনে কখনোই প্রভাব ফেলতে পারবে না। তাই দলীয় গোঁড়ামী, মাযহাবী ভেদাভেদ, তরীক্বার বিভক্তিকে পিছনে ফেলে রাসূল (ছাঃ)-এর ছালাতের পদ্ধতি অাঁকড়ে ধরতে হবে। ফলে সকল মুছল্লী একই নীতিতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ছালাত আদায়ের সুযোগ পাবে। পুনরায় মুসলিম ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হবে। ছালাতের মাধ্যমেই সমাজ দুর্নীতি মুক্ত হবে। ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজ জীবনে শান্তির ফল্গুধারা প্রবাহিত হবে। চরম দুর্ভাগ্যের বিষয় হল, দেশে প্রচলিত ইসলামী দলগুলো সমাজের সংস্কার কামনা করে এবং এ জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম করে থাকে। কিন্তু তাদের মাঝে রাসূল (ছাঃ)-এর ছালাত নেই। মাযহাব ও তরীক্বার নামে যে ছালাত প্রচলিত আছে, সেই ছালাতই তারা আদায় করে যাচ্ছে। ইসলামী আন্দোলনের কর্মী হিসাবে তারা যদি নিজেদের ব্যক্তি ও সামাজিক জীবনে মাযহাবী গোঁড়ামীর উপর রাসূল (ছাঃ)-এর আদর্শকে প্রাধান্য দিতে না পারেন, তাহলে জাতীয় জীবনে তারা কিভাবে ইসলামের শাসন কায়েম করবেন? বিশেষ করে রাসূল (ছাঃ)-এর তরীক্বায় ছালাত আদায় করতে তো সামাজিক ও প্রশাসনিক কোন বাধা নেই। তাহলে মূল কারণ কী? মাযহাবী আক্বীদা ও মায়াবন্ধনই মূল কারণ। এক্ষণে রাসূল (ছাঃ)-এর ছালাত প্রতিষ্ঠার জন্য কিভাবে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায়, সে সম্পর্কে আলোচনা করা প্রয়োজন। আমাদের একান্ত বিশ্বাস নিম্নোক্ত ব্যক্তিবর্গ বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করলে ইনশাআল্লাহ কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পাওয়া যাবে।
In stock
30 krপিতা মরহুম খোন্দকার আনোয়ারুজ্জামান। মাতা বেগম লুৎফন্নাহার।
ঝিনাইদহ আলিয়া মাদ্রাসায় ফাজিল পর্যন্ত অধ্যয়নের পর ১৯৭৯ সালে ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসা থেকে প্রথম শ্রেণীতে অষ্টম স্থান অধিকার করে হাদীস বিষয়ে কামিল পাশ করেন। সৌদি আরবের রিয়াদস্থ ইমাম মুহাম্মাদ বিন সাউদ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৬, ১৯৯২ ও ১৯৯৮ সালে যথাক্রমে স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পি-এইচ.ডি ডিগ্রি লাভ করেন। দেশ ও বিদেশে যে সকল প্রসিদ্ধ আলিমের কাছে তিনি পড়াশোনা ও সাহচর্য গ্রহণ করেছেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন খতীব মাওলানা ওবাইদুল হক (রাহ.), মাওলানা মিয়া মোহাম্মাদ কাসিমী (রাহ.), মাওলানা আনোয়ারুল হক কাসিমী (রাহ.), মাওলানা আব্দুল বারী সিলেটী (রাহ.), মাওলানা ড. আইউব আলী (রাহ.), মাওলানা আব্দুর রহীম (রাহ.), আল্লামা শাইখ আব্দুল্লাহ ইবন আব্দুল আযীয ইবন বায (রাহ.), আল্লামা আব্দুল্লাহ ইবন আব্দুর রহমান আল-জিবরীন (রাহ.), আল্লামা মুহাম্মাদ ইবন সালিহ ইবন মুহাম্মাদ আল-উসাইমীন (রাহ.), শাইখ সালিহ ইবন আব্দুল আযীয আল শাইখ, শাইখ সালিহ ইবন ফাওযান ইবন আব্দুল্লাহ আল ফাওযান।
কর্ম জীবনে তিনি কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে হাদীস বিভাগে শিক্ষকতা শুরু করেন ১৯৯৮ সালে। ২০০৯ সাল থেকে ২০১৬ সালের ১১ই মে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু বরণ করার আগ পর্যন্ত তিনি উক্ত বিভাগে অধ্যাপক পদে কর্মরত ছিলেন।
দেশে ও বিদেশে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় বাংলা ইংরেজী ও আরবি ভাষায়। তার প্রায় অর্ধশত প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর প্রকাশিত গবেষণামূলক গ্রন্থের সংখ্যা ত্রিশের অধিক।
গবেষণা কর্মের পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছেন। নৈতিকতা ও ধর্মীয় মূল্যবোধের সাথে আধুনিক শিক্ষার সমন্বয়ের লক্ষ্যে ১৯৯৮ খৃষ্টাব্দে তিনি ‘আল ফারুক একাডেমী’ নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। বিশুদ্ধ ইসলামী জ্ঞান ও মূল্যবোধ প্রচার ও মানব সেবার উদ্দেশ্যে ২০১১ সালে ‘আস-সুন্নাহ ট্রাস্ট’ নামে একটি সেবা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন এবং ২০১২ TC Education and Charity Foundation Jhenaidah নামে একটি শিক্ষা ও সমাজ সেবাসংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছেন। এ সকল প্রতিষ্ঠান শিক্ষাপ্রচার, ধর্ম প্রচার, দুস্থ নারী ও শিশুদের সেবা ও পুনর্বাসনে বিভিন্ন কর্মকান্ড পরিচালনা করছে।
No account yet?
Create an Account